বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল নগরীর ১১নং ওয়ার্ড বিআইপি শাখা সড়কের বাসিন্দাদের বাড়ির প্লান ও জমির সকল কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের দ্বারা হয়রানি করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগীরা।
(১১ই অক্টোবর শনিবার) সকাল সাড়ে ১১টার সময় বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন বিআইপি শাখা সড়কের প্রায় ৩৫ পরিবার।
বিআইপি শাখা সড়কের বাসিন্দাদের পক্ষে মোঃ মজিবর রহমান উল্লেখ করে বলেন, আজকে এই সংবাদ সম্মেলনে এসেছি আমাদের পায়েরতলার মাটিটুকু বাঁচাতে। আমাদের পিট এখন দেয়ালে ঠেকে গেছে। এখানে যারাই বসবাস করেন বেশিভাগ পরিবারই সরকারী চাকুরিজীবি ছিলেন। জীবনের সমস্ত সঞ্চয়ের মাধ্যমে এবং ধার দেনা করিয়া সিটি কর্পোরেশন আইন ও সংশ্লিষ্ট বিধি মান্য করিয়া ইমারত নির্মাণ করিয়াছেন। আমাদের সামান্য পরিমাণ কোন ক্ষয়ক্ষতি হইলে সমাজে পরিবার পরিজন নিয়া মানবেতর জীবন যাপন করিতে হইবে। আমাদের সকলের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে যা আমরা ইতি মধ্যে একাধীকবার বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে দাখিল করেছি। যুগ যুগ ধরে বিআইপি শাখা সড়কে প্রায় ৪০ পরিবার বসবাস করে আসছি। যদি আমাদের এখানে কারো বিসিসির প্লান না থাকে তা হলে তাদের বিরুদ্ধে বিসিসির পক্ষ থেকে আইনকানুন ব্যবস্থা গ্রহন করা হোক।
বিআইপি শাখা সড়ক বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ১১নং ওয়ার্ডের আওতাধীন জে. এল. ৫০নং বগুড়া আলেকান্দা মৌজার এস, এ. ১৩৬৪০নং খতিয়ানের হাল ৬১৯০নং দাগের ভূমির উপর আমরা সকলে যে যার মত বিল্ডিং নির্মাণের লক্ষে বিভিন্ন হোল্ডিং ব্যবহার করে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন হইতে ইং ০১/০২/২০১৭ তারিখ ১৮৫/পি.ডব্লিউ নং প্লান পাস করি। আমরা সকলেই এই প্লানের আওতাধীন। উদ্যত ধারাবাহিকতায় সিটি কর্পোরেশনের ইং ০৭/১০/২০১৮ তারিখের স্মারক নং- বিসিসি/ইডি/২৩/১৮ এর মাধ্যমে অনাপত্তি সনদ প্রাপ্ত হই।
প্রকাশ থাকে যে, বিরোধীয় ভূমি সম্পর্কে বরিশালের বিজ্ঞ ৬ষ্ঠ মুন্সেফী আদালতের দেওয়ানী ২৫৭/১৯৭৬নং মোকদ্দমার ইং ২৮/০৪/১৯৭৬ তারিখের রায় ও ডিক্রী অনুবলে বাংলাদেশ সরকার পক্ষে জেলা প্রশাসক, বরিশাল গংদের বিরুদ্ধে বরিশালের বিজ্ঞ ২য় অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতের দেওয়ানী আপীল ৪৮/২০১৫নং মোকদ্দমায় ইং ১২/০২/২০১৮ তারিখ রায় প্রাপ্ত হই। উক্ত রায় ডিক্রী বহাল ও বলবৎ আছে।
মহোদয় বিরোধীয় ভূমি সম্পর্কে মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রীট পিটিশন ২৬৪৩/২০২২ নং মোকদ্দমায় মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক মেয়র, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে স্থিতিবস্থার আদেশ বহাল আছে। সর্বশেষ স্থিতিবস্থার আদেশ ইং ২৪/০৮/২০২৫ তারিখ ০৬ (ছয়) মাসের জন্য বর্ধিত হয়। উল্লেখিত রীট পিটিশনের নোটিশ মহোদয়ের কার্যালয় হইতে ইতিপূর্বে গৃহীত হইয়াছে।
কিন্তু আমাদের জমির কাজপত্র ও বিসিসি থেকে দেয়া প্লান কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও গত ২৯/০৯/২০২৫ তারিখে সরেজমিন তদন্তকালীন আমার নিকট সিটি কর্পোরেশনের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী প্লান প্রদর্শনের জন্য অনুরোধ করেন নাই। তারা আমাদের কাছে না জানতে চেয়েই আমাদের নোটিশ করেন। আমরা পরবর্তীতে সকলে ০৬/১০/ ২০২৫ তারিখে আমাদের প্লানের কাগজপত্র বিসিসিতে জমা দেই এবং বিসিসি থেকে আমাদের সকলকে একটি করে রিসিভ কপি দেয়া হয়।
তিনি আরো উল্লেখ করে বলেন, আমরা এলাকাবাসি জানতে পারি একটি কু-চক্রিমহল আমাদের জমিকে খালের জমি হিসাবে চিহ্নিত করে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়কে ভুল বুঝিয়েছেন। তাই আমরা আবারও গত ০৯/১০/২০২৫ তারিখে বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়ের সাথে দেখা করে আমাদের জমির কাগজপত্র ও প্লানের বিষয় অবগত করি। পরে বিভাগীয় কমিশনার মহোদয় আমাদের জানান,সরেজমিনে তদন্ত করে তিনি ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
এ বিষয়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওছার কে মোবাইল করা হলে তিনি জানান হাইকোর্ট ও নিম্ন কোটের স্টেটের বিষয়ে আমার জানা নেই। যুক্তিহীনভাবে মানুষের বসবাস করা ভবন আমার ভাঙ্গা উদ্দেশ্য নয়, তবে আমি যাচাই-বাছাই করে মানুষের মঙ্গলের জন্য যেটা ভালো হয় সেটাই করবো।