স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা কামরুলের ভাই জাফর এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরেই চাঁদমারী ঘাটে চাঁদাবাজি করে আসছেন। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন সাদিক আব্দুল্লাহর সাবেক সহযোগী এবং আলোচিত ক্যাডার সুমন ওরফে ‘তৈল সুমন’।
গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সুমন নিজেকে আড়াল করে জাফরের সঙ্গে যুক্ত হন। অভিযোগ রয়েছে, এখন তিনি বিএনপি ঘনিষ্ঠ পরিচয়ে ঘাট এলাকায় চাঁদা আদায় করছেন। দূর-দূরান্ত থেকে আসা মালবাহী ট্রাক ও বলগেট থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায়ই তার মূল কাজ।
ভুক্তভোগী একাধিক চালক অভিযোগ করেছেন, দাবি করা চাঁদা না দিলে তাদের মারধর, গালিগালাজ এমনকি হত্যার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে।
পঞ্চগড় থেকে আসা ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট ১৫-২৩৭২)-এর চালক সফিক বলেন: “আমার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়া হয়েছে। না দিলে গালিগালাজ করে ভয় দেখায়। জীবন বাঁচাতেই টাকা দিতে বাধ্য হই।”
আরেক চালক আব্দুল মতিন বলেন:
“আমার ট্রাক চাঁদমারী ঘাটে বালু আনলোড করছিল। তখন সুমন নামে একজন আমার গাড়ি আটকায় এবং ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। অনেক অনুরোধে ৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।”
এ বিষয়ে মের্সাস জিহাদ এন্টারপ্রাইজ এর মালিক হাফেজ মো: মোবাশ্বের খান বলেন: “আমি বহু বছর ধরে বরিশালে ব্যবসা করছি। আগেও রাজনৈতিক কারণে ক্ষতির শিকার হয়েছি। এখনো জাফর ও সুমন আমার কাছে চাঁদা দাবি করছে।
আমি একবার অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে বালু সরবরাহ করতে গেলে তারা বাধা দেয়। জিজ্ঞেস করি কেন? উত্তরে ভয়ভীতি দেখায়, গালাগাল করে। পরে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা কামরুল ফোন করে হুমকি দেয়—জাফরের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নিলে আমার কোনো গাড়িই আর চানমারি ঘাটে ঢুকতে পারবে না।”
এ বিষয়ে জাফরের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
চাঁদমারী ঘাটে চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মো: মিজানুর রহমান বলেন: আমাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য: বহু বছর ধরে চাঁদাবাজির নানান কাহিনী যেন স্থায়ীভাবে রূপ নিয়েছে বাধ রোড় অঞ্চলে, তাই প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন একাধিক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী।